শীতে শিশুর যত্ন: শীতে শিশুর যত্নঃ শীতের শুরুর দিকে বিষেশ করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে আমাদের একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বাড়তি সতর্কতা অবলম্ন করতে হবে পুরো শীতের সময়টা জুড়ে। খেয়াল করলে দেখবেন যে, শীত শুরুর দিকে সকালে গরম লাগলেও সন্ধ্যাও রাতের দিকে ঠান্ডা বেশ ভালো পড়ে। এ মিশ্র ধরনের আবহাওয়াতে সচরাসচ বাচ্চারা খাপখাওয়াতে পারে না। এতে করে বাচ্চারা বিভিন্ন ধরনের ঠান্ডাজনিত রোগ যেমনঃ জ্বর, ঠান্ডা, কাশি এবং সর্দিজনিত কমন সব রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
শীতে শিশুর যত্ন কেমন হওয়া উচিৎ? শীতে শিশুর ত্বকের যত্ন কেমন হওয়া উচিত? শীতে শিশুর যত্নে বাচ্চাদের কতবার এবং কিভাবে গোসল দিবেন? শীতে শিশুর যত্নে বাচ্চাদের পোশাক কেমন হওয়া উচিত?
শীতে শিশুর যত্নে বাচ্চাদের খাবার কেমন হওয়া উচিত? কি ধরনের খাবার খেলে শীতে বাচ্চারা সুস্থ থাকবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে? এবং শীতে শিশুর যত্নে কি ধরনের সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে করে শীতে আপনার বাচ্চা সুস্থ থাকতে পারে।
শীতে শিশুর যত্ন কেমন হওয়া উচিৎ?
শীতে শিশুর যত্নে ঠান্ডা বাতাস এবং ধুলোবালি থেকে দূরে রাখা
বিশেষ পরিচর্যার মধ্যে একটি হচ্ছে বাচ্চাদেরকে শীতের ঠান্ডা বাতাস এবং ধুলোবালি থেকে দূরে রাখা। শীতকালে কিন্তু ঠান্ডা একটা বাতাসের সাথে সাথে ধুলাবালি পরিমাণটাও বেড়ে যায়। আর এই কারণে কিন্তু শীতে শুষ্ক হওয়া এবং ধুলাবালির কারণে বাচ্চারা কমন কোল্ড যেমন সর্দি, কাশি, নিমুনিয়া এই ধরনের রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। বিশেষ করে আমাদের এক বছরের ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই এই ধরনের রোগে আক্রান্ত তা তারা সহজেই হয়ে যায়। এ কারণে বাচ্চাদেরকে যতটা সম্ভব কম জনবহুল জায়গা, যেমন: মেলা, পিকনিক, এই ধরনের জায়গাতে কম নিয়ে যেতে হবে এবং নিরাপদে রাখতে হবে।
শীতে শিশুর যত্নে গরম পানি ব্যবহার
বিশেষ পরিচর্যার মধ্যে আরো একটি হচ্ছে গরম পানি ব্যবহার। পানি বলতে কুসুম গরম পানি যা বাচ্চারা সহনীয় একেবারে ঠান্ডা পানি না। এইটা ব্যবহার যদি আপনি বাড়িয়ে দিতে পারেন তাহলে বাচ্চারা শীতকালে যে ঠান্ডা পানি থেকে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকে সেটা অনেকাংশে কমে আসে। যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে বাচ্চাদেরকে দাঁত ব্রাশ করানো বা অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত করা যদি ঠাণ্ডা পানির বদলে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারি তাহলে কিন্তু বাচ্চারা ঠান্ডা পানি থেকে ঠান্ডা লাগার যে আশঙ্কা থাকলেও তা অনেকাংশে কমে যায়, এবং তাদের জন্য আরামদায়ক হয়।
শীতে শিশুর যত্নে গামছা, তোয়ালে, রুমাল ইত্যাদি জিনিস আলাদা রাখা
এরপর এটা হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ শিশুদের গামছা, তোয়ালে, রুমাল ইত্যাদি জিনিস আলাদা রাখতে হবে। এটা শুধু শীতকালে না এটা সব সময়ের জন্যই ভালো। শিশুর জন্য আলাদা দুইটা থেকে তিনটা সেট রুমাল, গামছা, তোয়ালে কিন্তু রাখতে পারেন।
শীতে শিশুর যত্নে মাস্ক ব্যাবহার করতে হবে
আর খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে, মাস্ক ব্যাবহার করতে হবে । যেসব বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে কোচিং আবার টিউশনিতে যাচ্ছে। তাদেরকে মাস্ক ব্যবহার অবশ্যই করাতে হবে। কারণ শীতকালে ধুলাবালি থেকে মুক্ত পাবে, এছাড়া মাক্স ব্যবহার করলে কিন্তু ভাইরাসের হাত থেকে অনেকটা রক্ষা পাবে। সুতরাং মাস্ক ব্যবহার করতে অনেকটা সচেতন করতে হবে বাচ্চাদের।
আক্রান্ত ব্যক্তির হাসিখুশি সময় শিশুদের দূরে রাখা
আর এরপরে হচ্ছে আক্রান্ত ব্যক্তির হাসিখুশি সময় শিশুদের দূরে রাখতে হবে। বিশেষ করে এখনতো কোভিটের সময় এই জিনিসটা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চেষ্টা করবেন পরিবারের মধ্যে যদি কারো হাচি, কাশি হয় বা বাবা-মার মধ্যে যদি হাচি, কাশি হয় তখন বাসার মধ্যেই মাক্স ব্যবহার করতে হবে।
শীতে শিশুর যত্নে বাচ্চাদের কতবার এবং কিভাবে গোসল দিবেন?
শীতে শিশুদের গোসল সম্পর্কে কি কি জিনিস আপনাদেরকে মাথায় রাখতে হবে? শীতে শিশুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে যা খুব প্রয়োজন। যেসব বাচ্চারা ছোট তাদেরকে একদিন পর একদিন গোসল দিলেও সমস্যা নাই। এবং গোসলের সময় কুসুম গরম পানি দিয়ে শিশুদের গোসল করাতে হবে। মাথা ধোয়ানোর সময় অবশ্যই স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি ব্যবহার করতে হবে। আর আপনি গরম পানি ঠান্ডা পানির সাথে মিশিয়ে হাত দিয়ে চেক করবেন যে বাচ্চার শরীরে তাপমাত্রার সাথে যেন পানিটা ভালোভাবে এডজাস্ট হয়। খুব বেশি গরম বা খুব বেশি ঠান্ডা করা যাবে না।
নিয়মিত শিশুকে গোসল করানো খুবই জরুরী। কারণ শীতকালে কিন্তু চর্ম রোগের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাই নিয়মিত যদি শিশুকে গোসল করান হয় তাহলে কিন্তু বাচ্চা চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে অনেকটা মুক্তি পাবে। আর অবশ্যই, গোসলের আগে জলপাই অর্থাৎ অলিভ অয়েল বা আমন্ড অয়েল বা খাঁটি নারিকেল তেল ব্যবহার করা ভালো অর্থাৎ যারা মেসেজ করাতে চান শিশুর শরীর তার এই ধরনের অয়েল দিয়ে আপনারা বাচ্চার শরীর মাসাজ করাতে পারেন। এবং একটা জিনিস মাথায় রাখবেন যে, শীতকালে গোসলের আগে দশটা থেকে বারোটার মধ্যে বাচ্চার শরীর মাসাজ করে দিতে পারেন। অর্থাৎ দশটা থেকে বারোটার মধ্যে বাচ্চার গোসল সেরে ফেলতে হবে। আর যখন মাসাজ করাবেন বা গোসল করবেন তখন ঠান্ডা জায়গায় করাবেন না। যেহেতু একটু শীত পরে তার কারণে বাচ্চাদের কিন্তু ঠান্ডা লেগে যাবে।
যদি ঠান্ডা জায়গায় গোসল বা ঠান্ডা জায়গায় আপনি বাচ্চার শরীর মেসেজ করেন। যেখানে একটু গরম অথবা একটু রোদ আসছে এমন একটি জায়গা বেছে নিবেন বাচ্চাদের তেল মালিশ করানো এবং গোসল করানোর ক্ষেত্রে। আর যখন তেল মালিশ করাচ্ছেন বাচ্চাকে তখন অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে বাচ্চা আরাম পায়। খুব আলতো হাতে মাসাজ করাবেন। খুব বেশি জোরে মালিশ করলে কিন্তু বাচ্চা জয়েন্টে ব্যথা পেতে পারে। শীতকালে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন আপনি বেবি বডি ওয়াশ অথবা বেবি শ্যাম্পু অথবা সাবান ব্যবহার করতে পারেন। তবে দুই বছরের বাচ্চাদের সাবান ব্যবহার না করে যদি বেবি বডি ওয়াশ ব্যবহার করেন তাহলেই ভালো হবে। আর শ্যাম্পু করার সময় শিশুকে মাথা খুব আলতো ভাবে মাসাজ করাবেন। জোরে জোরে মাসাজ করালে শিশুর ফলিকল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তাই এদিকটাতে একটু সচেতন থাকতে হবে। এবং গোসলের পর বাচ্চার মাথা ও শরীর খুব ভালো করে মুছে তারপর জামা কাপড় পড়াবেন। ত্বক ভালো রাখতে গোসলের পর অবশ্যই বেবি লোশন বা অলিভ অয়েল বা ব্যবহার করতে পারেন। না হলে ত্বক কিন্তু রুক্ষ হয়ে যাবে। গোসলের পর গরম কাপড় পরিয়ে দিলেন।
শীতে শিশুর ত্বকের যত্ন কেমন হওয়া উচিত?
শীতের আগমনের সাথে সাথেই শিশুর ত্বকে বেশ পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। শীতে শুষ্ক আবহাওয়া থাকায় ত্বকে দেখা যায় এক ধরনের রুক্ষতা। শিশুদের ত্বক বড়দের থেকে অনেক বেশী সেনসিটিভ। তাই তাদের ত্বক অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়। আর্দ্রতার কারণে শিশুদের ত্বক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়। তাই শিশুর কোমল ত্বকের যত্ন নিতে অবশ্যই ভালো মানের বেবি লোশন বা ক্রিম লাগাতে হবে বা বেবি মশ্চারাইজার লাগাতে পারেন। এছাড়াও বেবি অয়েল, অলিভ অয়েল, আমন্ড অয়েল, খাঁটি নারিকেল তেল, গ্লিসারিন বা বেবি মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। তবে দুই বছরের নিচের বাচ্চাদের, গ্লিসারিন ব্যবহার না করাটাই বেশি ভালো। যদি করতেই হয় তাহলে দুই বছরের উর্ধ্বে বা তাদের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন ব্যবহার করবেন এবং সেটা খুব ভালো ব্রান্ডের।
তবে গ্লিসারিন এর বদলে যদি ভ্যাসলিন ব্যবহার করতে পারেন তাহলে কিন্তু ভালো। শিশুর মুখে মশ্চারাইজার এবং সারা শরীরে বেবি লোশন বা বেবি অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। যেমন শীতের বাচ্চাদের ত্বক মসৃণ রাখতে অলিভ অয়েল, খাঁটি নারিকেল তেল , এগুলো কিন্তু খুব ভালো হয়। যতটা কম কেমিক্যাল সম্পন্ন জিনিস ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। এছাড়াও দিনের মধ্যে যদি বাচ্চাকে পরিষ্কার করার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে কুসুম গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করবেন। এবং খুবই নরম একটি রুমাল দিয়ে পরিষ্কার করবেন। তারপর বেবি লোশন বা মশ্চারাইজার লাগিয়ে দিবেন। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে বাচ্চাকে পরিষ্কার করে ঠিক একই পদ্ধতিতে বেবি লোশন বা মশ্চারাইজার ব্যবহারের লাগাতে পারেন। তবে খুবই কম লাগাতে হবে।
শীতে শিশুর যত্নে বাচ্চাদের পোশাক কেমন হওয়া উচিত?
উষ্ণতা বা গরম পোশাক কেমন হতে হবে, কেমন হওয়া উচিত বা কি কি জিনিস লক্ষ্য রাখতে হবে শীতে? শীতে শিশুদের অবশ্যই উলের পোশাক পরিয়ে রাখা উচিত। তবে চিকিৎসকদের মতে, শিশুদের সরাসরি উলের পোশাক পরানো ঠিক নয়। এতে উলের ক্ষুদ্র লোমে শিশুদের এলার্জি হতে পারে। তাই আগে সুতি কাপড় পরিয়ে তার উপর উলের পোশাক পরানো উচিত। এবং পোশাকটি যেন নরম কাপড়ে হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কারণ খসখসে বা শক্ত কাপড়ে শিশুদের নরম ত্বকে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও এক বছরের নিচের বাচ্চা বা তার উর্ধে শিশুকে নরম কাপড়ে জুতা পড়ানোর অভ্যাস করুন।
২ থেকে ৩ বছরের বাচ্চাদের বা তার ওপর বাচ্চাদের যারা হাঁটতে পারে তাদের স্যান্ডেল পড়িয়ে রাখার অভ্যাস করুন। কারণ শীতকালে ঠাণ্ডা মেঝেতে তারা যদি খালি পায়ে হাটে ঠান্ডা লেগে যাবে। এছাড়া হাত এবং মাথা ঢেকে রাখুন। এরকম হাত মোজা, পা মোজা এবং মাথার টুপি ব্যবহার করুন। যে টুপিতে কান ঢেকে যাবে। কারণ বাচ্চারা খেলবেই, যেসব বাঁচার হামাগুড়ি দিতে পারে বা হাঁটতে পারে তারা কিন্তু বাইরে বা উঠানে, বারান্দায়, ছাদের যেতেই পারে। নজর রাখতে হবে বাচ্চার যাতে ঠান্ডা বাতাসে ঠান্ডা না লাগে সে ব্যাপারে কিন্তু লক্ষ্য রাখতে এই ধরনের গরম পোশাক পরতে হবে। কারণ বাচ্চারা খুবই সংবেদনশীল।
আরো একটি বিষয়ে আমাদের বাবা মাকে একটু সচেতন থাকতে হবে। বাচ্চাদের যখন হালকা শীত থাকে তখন অতিরিক্ত গরম কাপড় পরিয়ে রাখবেন না। হালকা শীতে গরম কাপড় পড়লে বাচ্চারা কিন্তু ঘেমে যায় আর সেই ঘামটা কিন্তু ভেতরে বসে গিয়ে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। সেজন্য হালকা শীতে খুব বেশি গরম কাপড় পরাবেন না। শীত বুঝে গরম কাপড় দিবেন। শিশুদের রাতে ঘুমানোর আগে একটি ফুল হাতা বা হালকা পাতলা গেঞ্জি পড়িয়ে ঘুম পাড়াতে পারেন। আর যেসব বাচ্চারা হামাগুড়ি দেয়। দেখবেন, তারা যেন ঠাণ্ডা মেঝেতে হামাগুড়ি না দেয়। কার্পেট ব্যবহার না করে যদি মাদুর বা ম্যাট ব্যবহার করেন তাহলে ভালো। কারণ কার্পেটে ধুলা থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। কার্পেটে যেহেতু অনেক ধুলা জন্মে, তাই কার্পেট ব্যবহার করল পরিষ্কারের মধ্যে থাকতে হবে এবং রোদে দিতে হবে।
শীতে শিশুর যত্নে বাচ্চাদের খাবার কেমন হওয়া উচিত?
প্রথমেই বলব, যেসব বাচ্চারা একেবারে ছয় মাসের কম শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ অথবা বিকল্প ফর্মুলা দুধের ওপরে নির্ভর। তাই শীতে শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বুকের দুধ দিন। যেসব বাচ্চারা ফর্মুলা দুধ খাচ্ছে, চেষ্টা করবেন তাদেরকে গরম গরম দুধ খাওয়াতে। অর্থাৎ সহনীয় তাপমাত্রায় এরকম গরম হবে। ঠান্ডা দুধ একেবারেই দিবেন না। এতে করে বাচ্চাদের এসিডিটির সমস্যা হতে পারে এবং শীতকালে ঠান্ডা দুধ খেলে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর ৬ মাস বা তার উর্ধে বুকের দুধের পাশাপাশি আপনার শিশুকে শীতকালে বেশি ফলমূল, শাকসবজি ও সুষম খাদ্য খাওয়াতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য।
এছাড়াও মাছ, মাংস, ডিম, লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাকসবজি, গাজর, টমেটো শিশুদের ত্বকের জন্য বিশেষ করে উপকারী। এসব সবজি শিশুদেরকে দিতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ফলমূল, লেবু, কমলা লেবু স্ট্রবেরী জাতীয়, ভিটামিন সি জাতীয় ফল বেশি করে দিবেন। কারণ আপনার বাচ্চার ভিটামিন সি থেকে কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এতে করে খুব দ্রুতই বিভিন্ন ভাইরাস এর বা বিভিন্ন রোগের বিপক্ষে তারা লড়াই করতে পারে।। আর সপ্তাহে দুইদিন সামুদ্রিক মাছ রাখার চেষ্টা করুন।
সামুদ্রিক মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড আছে, যা বাচ্চাদেরকে বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত সমস্যা এছাড়াও বাচ্চাকে মস্তিষ্ক বিকাশের, ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিটি বয়স বুঝে কিন্তু খাবার গুলো দিতে হবে সব বয়সের বাচ্চারা কিন্তু সবকিছু খেতে পারবে না। যেমন বাদাম, মাছ-মাংস কিন্তু আট মাস থেকে শুরু করবেন। ৬ মাস থেকেই দেওয়া যাবে না। এটা কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ বাচ্চাদের একটা এলার্জি হওয়ার প্রবণতা থাকে। তাই প্রতিটা বয়সভেদে কিন্তু খাবার পরিচয় করানোর পর্ব আলাদা আলাদা।
আর বিভিন্ন ধরনের সুপ দিতে পারেন। যেমন মুগের ডালের স্যুপ, টমেটো স্যুপ, এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শীতের সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়াতে পারেন। যেমন ডিম খিচুড়ি, মুরগির খিচুড়ি, মাছ দিয়ে তৈরি খিচুড়ি। আর শীতের সময় যেন বাচ্চারা কোন ধরনের ঠান্ডা জাতীয় জিনিস খাবার না খায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। এরপর অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় তা হচ্ছে, বাচ্চাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে। শীতকালে সাধারণত পানির পিপাসা কম লাগে আর এ কারণে কিন্তু পরিমাণ অনুযায়ী পানি কম খাওয়া হয়। বাচ্চাকে বয়স বুঝে তার পরিমাণ মত পানি দিতে হবে। তাকে সতেজ রাখতে ডিহাইড্রেট যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
শীতে শিশুর যত্নে কি ধরনের সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে?
প্রথমেই যে ব্যাপারটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অহেতুক অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বা অন্য কোন ঔষধ, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধের দোকান থেকে ওষুধ কেনা ইত্যাদি করলে শিশুর ক্ষতি হতে পারে। তাই এগুলা করা থেকে বিরত থাকতে হবে শিশুর অসুস্থতাই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। এবং বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া শীতকালে বাচ্চার মাথা ন্যাড়া করা বা টাক করা থেকে বিরত থাকুন। শিশুর নাক বা মুখের ওপর কাপড়, লেপ-কম্বল, কেথা ইত্যাদি দিবেন না বা চলে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনের বেশি সোয়েটার না পড়লেই ভালো। তাতে করে বাচ্চা ঘেমে গিয়ে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
শীত বলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় অবহেলা না করে নিয়মিত শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। আর ত্বক ভালো রাখতে অবশ্যই বেবি লোশন, অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন নাহলে শীতে রুক্ষ ত্বকের ক্ষতি করে দিতে পারে। শীত মৌসুমে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করা, আইসক্রিম খাওয়া ইত্যাদি এবং রাতের বেলায় ফ্যান ছেড়ে ঘুমিয়ে যাওয় এ সকল কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। শীতের শুরুতে এবং রোদ উঠলে মাঝে মাঝে শিশু লেপ-তোষক, কাঁথা, কম্বল, চাদর ইত্যাদি রোদে দিতে হবে। রোদ থেকে তোলার পর অবশ্যই তা খুব ভালোভাবে ঝেরে ঘরে রাখতে হবে এবং ধুলাবালি থেকে রক্ষার জন্য ভালো একটি কভার পরিয়ে রাখতে পারেন।