Sunday, September 8, 2024
HomeRecent Live BanglaHEALTH TIPS BANGLAগর্ভধারণের যে ৯টি বিষয় মাথায় রাখবেন। সুস্থ বাচ্চা জন্মদান

গর্ভধারণের যে ৯টি বিষয় মাথায় রাখবেন। সুস্থ বাচ্চা জন্মদান

মায়ের জীবনযাত্রার উপর অনেকাংশে নির্ভর করে শিশু সুস্থ ভাবে জন্মাবে কিনা। এজন্য  জানতে হবে গর্ভধারনের জন্য যেসকল কাজ করতে পরবে আর কোন কাজগুলো করতে পারবে না। যে ৯টি কাজ গর্ভধারনের সময় পূর্বে মাথায় রাখতে হবে।

গর্ভধারণের পূর্বে গুরুত্বপূর্ণ ৯টি বিষয়

১. খাবারঃ

গর্ভধারণের যে ৯টি বিষয়

শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে একজন গর্ভবতী নারীকে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও আয়োডিনযুক্ত খাবার খেতে হবে। যেটা কিনা মৌসুমী ফল, টাটকা শাক-সবজি, ডাল, বাদাম, মাছ, মাংস, ডিম ও পাস্তুরিত দুধ পাওয়া যায়। তাই ভাত কম খেয়ে এসব খাবার বেশি বেশি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া দিনে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খাওয়া অভ্যাস করা বেশি জরুরি।

তবে হ্যাঁ, এই সকল ফল এবং সবজি গুলো ভালভাবে ধুয়ে তারপর খাবেন। মাছ, মাংস, ডিম যেটাই খান না কেন, পুরোপুরি সিদ্ধ করে খাবেন, কাঁচা আধা সিদ্ধ খাবার বা বাঁশি অথবা ভেজাল মেশানো খাবার অপাস্তুরিত দুধ, দই, পনির, টেস্টিং সল্ট, ফাস্টফুড, ভাজাপোড়া এসব খাওয়া যাবেনা। কারণ, এসবে ক্ষতিকর তেল-চর্বি, চিনি ও লবণ থাকে। ক্যাফেইন জাতীয় খাবার যেমন চা, কফি, চকলেট বা কোমল পানীয় যত সম্ভব এড়িয়ে চলুন। তবে সবচেয়ে জরুরি হলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপান বাদ দেয়া।

০২. ঘুমঃ

প্রতিরাতে ০৮ ঘন্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের কোনো বিকল্প নেই একজন গর্ভবতী মায়ের। এমনকি ০১ থেকে ০২ ঘন্টা দিনের বেলাতেও বিশ্রাম করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা আরো বলছেন, বিছানায় বাম কাত হয়ে শোয়া ভালো।

০৩. পরিচ্ছন্নতাঃ

গর্ভধারণের সময়ে মায়েদের প্রতিদিন দুইবার দাঁত ব্রাশ করার পাশাপাশি নিয়মিত সাবান পানিতে গোসল করার কথা বলছেন চিকিৎসকরা। খেয়াল রাখবেন, গোসলের স্থান যেন পিচ্ছিল না থাকে। চেষ্টা করুন টুল বা চেয়ারে বসে গোসল সেরে নিতে। পানির গামলা, মগ, কল, সাবান ইত্যাদি হাতের নাগালের মধ্যে রাখবেন, যেন ঝুঁকে পড়তে না হয়। পুকুরের পাড়ে অথবা টিউবওয়েল চেপে গোসল করতে গেলে আরেকজনের সাহায্য নিন। এ ছাড়া ত্বকে যেকোনো প্রসাধনী বা অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

০৪. পোশাকঃ

গর্ভবতী মায়েদের এমন পোষাক পড়তে হবে যা ডিলেডালা আরামদায়ক। চলাচলের সুবিধা জনক এবং পোশাক খুলতেও পড়তে যেন সমস্যা না হয়। তবে কোন অবস্থায় উঁচু হিল বা ফিতাওয়ালা জুতা কিংবা স্লিপ কাটে এমন জুতা পরা যাবে না। পায়ের মাপ অনুযায়ী আরামদায়ক ফ্ল্যাট জুতা পরুন।

০৫. চলাফেরা

চিকিৎসকদের মতে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস এবং শেষের তিন মাস বেশ সাবধানে চলাচল করতে হয়। তাই শরীরে বা মনে বাড়তি চাপ নেয়া যাবে না। দীর্ঘ সময় বসে বা দাঁড়িয়ে না থেকে হাঁটাচলা করা। এসময় দূরে কোথাও ভ্রমন, বিমানযাত্রা এড়িয়ে চলাই ভাল। এবড়ো খেবড়ো রাস্তা, পিচ্ছিল পথে চলাচল কিংবা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা সময় সাবধান হতে হবে। কোনো অবস্থাতেই ভারী বস্তু তুলবেন না। এ সময় অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শে এড়িয়ে চলতে হবে।

০৬. চিকিৎসা টিকা ঔষধ

আপনি যদি বাচ্চা নেয়ার পরিকল্পনা করেন, তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল ইতিহাস জানাবেন। যেমন আপনি আগে কতবার গর্ভধারণ করেছেন, গর্ভপাত হয়েছিল কিনা, শিশুর মা-বাবা তাদের পরিবারের কারও গুরুতর অসুস্থতা আছে কিনা, সেগুলো খুলে বলতে হবে। তাহলে চিকিৎসককে অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেবেন।

০৭. মানসিক স্বাস্থ্য

গর্ভবতী মায়েদের হরমোনের নানা পরিবর্তন আসায় তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব পড়ে। এসময় তারা শিশুর ভবিষ্যৎ এবং গর্ভকালীন শারীরিক পরিবর্তন নিয়ে অতিরিক্ত মানসিক আবেগ, মানসিক চাপ, হীনমন্যতা, দুশ্চিন্তা ও হতাশা ভোগেন। এবং এক্ষেত্রে অনেক গর্ভবতী নারীর ধর্ম চর্চার মাধ্যমে মনকে স্থির রাখার চেষ্টা করেন। এছাড়া বই পড়ে, ভালো সিনেমা দেখে, কিংবা পরিবার বন্ধুবান্ধবের সাথে হাসিখুশি সময় কাটাতে পারেন। বাড়িতে বা অফিস কোথাও গর্ভবতী নারীকে অতিরিক্ত কাজের অথবা চাপ অথবা মানসিক চাপে রাখা যাবে না। বরং তাদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস সহবাস থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

০৮. শিশুর সাথে যোগাযোগ

গর্ভধারণের যে ৯টি বিষয়

বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভধারণের কয়েক মাসের মধ্যে শিশু বাইরের জগতের শব্দ শুনতে পায় এবং মায়ের অনুভূতি উপলব্ধি করতে পারে। তাই এ সময়ে বাবা-মা দু’জনেরই উচিত হবে শিশুর সাথে কথা বলা, গল্প করার চেষ্টা করুন। এ সময় চেষ্ট্রা করুন ডিভাইসের ব্যবহার যতটা কমানো যায়। কারণ এর থেকে নির্গত বিকিরণ শিশুর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে, উচ্চ শব্দ যুক্ত পরিবেশ এড়িয়ে চলা জরুরি।

০৯. পোষা প্রাণী

আপনার বাড়িতে পোষা প্রাণী কিংবা বাড়ির আশেপাশে কোথাও খামার থাকে তাহলে এসব প্রাণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। এসময় প্রাণের সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই নিরাপদ বলে বৃটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা পরামর্শ দিয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular