Thursday, September 19, 2024
HomeHEALTH & FITNESSকিডনির কাজ ও কিডনি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনির কাজ ও কিডনি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনির কাজ ও কিডনি রোগ: আপনার কি কিডনি আছে? কিডনি থাকলে সমস্যা আছে? চলুন দেখি কিডনিতে সমস্যা আছে কিনা? তার আগে জেনে নেই

 কিডনি কি?

 কিডনি আসলে শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। প্রতিটি মানুষের শরীরে দুটি কিডনি থাকে। এটি আমি না বললেও আপনি জানেন।

শরীরে কিডনির কাজ কি?

 কিডনি আসলে শরীরে যে রক্ত থাকে, সেটি ফিল্টারিং করে মূত্র তৈরি করে। এছাড়া আমাদের শরীরে অতিরিক্ত পানি এবং বর্জ্যপদার্থ যেটি থাকে সেটি বের করে দেয় কিডনি। এছাড়া আমরা যে খাবার খাই, সেটি থেকে লবণ এবং খনিজ পদার্থ রক্তে মিশে যেতে সহায়তা করে কিডনি। এছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, হাড়ের গঠন মজুত রাখা এবং নতুন রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে কিডনি। এখন ভাবুন কিডনি যদি ঠিক মত কাজ না করে কি হবে? যেসব কাজের কথা বললাম এগুলো ব্যাহত হবে। বাংলাদেশ কিডনি ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থা আছে তাদের এক জরিপ বলছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় 2 কোটি কোন না কোন ধরনের কিডনি রোগে ভুগে থাকেন। আর প্রতিবছর অন্তত 40 হাজার কিডনি নষ্ট হয়। 

কিডনির কি কি সমস্যা হয়?

প্রথমত, কিডনি ফেইলুরঃ এটা তো আমরা সবাই শুনেছি কিডনি ফেলার এর কথা। তবে এর আরেকটি নাম আছে। সেটি হচ্ছে একে সিক্রেট ইউ বলা হয়ে থাকে। ক্রনিক কিডনি ডিজিজ হচ্ছে কিডনির এমন একটি অবস্থা যখন কিডনির দীর্ঘমেয়াদে ভালোভাবে কাজ করতে পারে না। সব বয়সী মানুষের মধ্যে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ দেখা যায়। তবে যারা একটু বয়স্ক তাদের মধ্যে এই আশঙ্কায় একটু বেশি থাকে।

রিসেন্ট লাইভ খবর পেতে ফলো করুন আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেল

ক্রুনিক কিডনি ডিজিসের লক্ষণঃ

 ক্লান্তি অনুভব করা, শ্বাসকষ্ট হওয়া, পায়ের গোড়ালি,পা বা হাত ফুলে যাওয়া, অসুস্থতা বোধ করা এবং সবশেষে প্রস্রাবের সাথে রক্ত পড়া। এসব উপসর্গ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। যারা  মূত্রাশয় সংক্রমণে ভোগেন, তাদের মধ্যে কিডনিতে সংক্রমনের আশংকা অনেক বেশি থাকে। তবে তার মানে এই নয় যে, আপনি যদি মূত্রসংক্রমণ এ ভোগেন তাহলে আপনার অবশ্যই কিডনিতে সংক্রমণ হবে। এটি তখনই হয়, যখন ব্যাকটেরিয়া মূত্রাশয় থেকে কিডনি পর্যন্ত পৌঁছে যায়। আর যদি একবার কিডনিতে ব্যাকটেরিয়া পৌঁছে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে কিডনিতে সংক্রমণ হয় ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।

কিডনি সংক্রমণ এর উপসর্গঃ

 জ্বর জ্বর ভাব বা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা, অসুস্থতা বোধ করা, শরীরের পেছনের দিকে ব্যথা করা, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া বা দুর্গন্ধ হওয়া এসব উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কিডনি শুনলে প্রথমে যে রোগটির কথা মনে আসি, সেটি মনে হয় কিডনিতে পাথর হওয়ার বিষয়টি। কিডনিতে পাথর আসলে যে কারই হতে পারে। তবে যাদের বয়স 30 থেকে 60 বছরের মাঝামাঝি তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কিডনিতে পাথর হওয়ার বিষয়টি আমাদের দেশে এত বেশি দেখা যায় যে প্রতি 10 জনের অন্তত একজনের মধ্যে কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে। সাধারণত কিডনি বা মূত্রনালী অর্থাৎ যে নালিটি মূত্রাশয় কে কিডনির সাথে যুক্ত করে, সেই মূত্রনালীতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। 

কিডনিতে পাথরের উপসর্গ কি?

কিডনিতে যদি পাথর হয়,  তাহলে তিনটে উপসর্গ অবশ্যই থাকবে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে, তলপেটের একপাশে ব্যথা, থেমে থেমে তীব্র ব্যথা অনুভব করা এবং অসুস্থতা বোধ করা। আর সেইসাথে বমি। এ লক্ষন গুলোর সাথে যদি শরীরের তাপমাত্রা বেশি হয়, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে, বা প্রসাবের সাথে রক্ত পড়ে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

 এবার জেনে নিব কিডনি ক্যান্সার। কিডনি ক্যান্সারকে রেনাল ক্যান্সারও  বলা হয়, সাধারণত 60 থেকে 70 বছর বয়সীদের মধ্যে কিডনি ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে  পঞ্চাশের কম যাদের বয়স তাদের মধ্যে এই ক্যান্সার হয় না বললেই চলে। কিডনি ক্যান্সার যদি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে, তাহলে এটি সম্পূর্ণ নিরাময় যোগ্য। তবে একদম শেষ পর্যায়ে গিয়ে কিডনি ক্যান্সার ধরা পড়ে তাহলে সে ক্ষেত্রে এটি প্রায় নিরাময় হয় না বললেই চলে।

কিডনি ক্যান্সারপর উপসর্গ কি?

কিডনি ক্যান্সারের আসলে কোন উপসর্গ থাকে না বললেই চলে। তবে কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা কিডনি ক্যান্সার থাকলে চোখে পড়ে।কিডনি ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও তিনটি লক্ষন  বেশ গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্রাবে রক্ত পড়া বা প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হয়ে লাল বর্ণের হওয়া, দ্বিতীয়টি হচ্ছে পাঁজরের ঠিক নিচে বা শরীরের পেছনের দিকে একপাশে ব্যথা করা এবং তৃতীয়টি হচ্ছে শরীরের পেছনের দিকে পিণ্ড বা ফোলা ভাব। এ ধরনের উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। তবে তার মানে এই নয় যে, আপনার এ ধরনের উপসর্গ রয়েছে তাই বলে আপনার কিডনি ক্যান্সার হয়েছে। তবে একটি কথা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে সর্তকতা সবার আগে। আপনি কি কিডনিকে ভালো রাখতে চান? তাহলে জীবনযাত্রায় পাঁচটি পরিবর্তন নিয়ে আসুন।

 প্রথম পরিবর্তন বেশি বেশি খেতে হবে। বেশি বেশি খেলে কিডনি ঠিকমত কাজ করার সুযোগ পায়। পস্রাব সবসময় ঘরের রঙের হতে হবে। যদি হয়ে যায় বা লাল হয়ে যায় তখন বুঝতে হবে যে শরীরে তরলের পরিমাণ কমে গেছে।

 2. স্বাস্থ্যকর খাবার খান।পরিমিত এবং স্বাস্থ্যকর খাবার আপনার শরীরের সব ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান এর যোগান দেয়। অতিরিক্ত লবণ এবং চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। 

3 .নিয়মিত পরীক্ষা করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কারণ অতিরিক্ত রক্তচাপ কিডনি এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

৪. ধূমপান পরিহার করুন। এবং আপনি যদি অ্যালকোহল নিয়ে থাকেন তাহলে অ্যালকোহল পরিত্যাগ করতে হবে অথবা এর মাত্রা কমিয়ে দিতে হবে।

৫. কিডনিকে ভালো রাখতে সিল্ম থাকুন। শরীরের অতিরিক্ত ওজন উচ্চরক্তচাপের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। আর উচ্চরক্তচাপ কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই খাবার  পরিমিত মাত্রায় খেয়ে ভালো থাকুন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular